Skip to main content

Posts

Showing posts from December, 2011

কষ্টের খুজে -তুচ্ছ

অনেক কষ্ট নিয়ে শেষ পর্যন্ত আবার আমি লিখতে বসলাম দূরভাগ্যবশত কোনক্রমেই একটি পংক্তিও আসছে না এই অবাধ্য আত্মায় শেষে উপায় খুজে না পেয়ে একটি বিক্ষিপ্ত শব্দ খুজে পেলাম বৃষ্টির শীতল ঝাট থেকে ঐ দূরের প্রকান্ড দালানের সমাপ্ত না হওয়া ছাদের মরিচা ধরা লোহার পিঞ্জর থেকে আনলাম সুখ পাখিকে ভালবাসাকে আনলাম মায়ের কোল ছিনিয়ে অসীম পথ ধার দিল বিস্তৃত দৃষ্টি ঝরনার উঞ্চ জল আনলাম হরিণীর টলটলে আখি থেকে আস্তে আস্তে একটা একটা শব্দ মিলেয়ে তৈরি করছি অমর কবিতা এক সময় শেষ হয়ে আসলো আমার লেখা একবার চোখ বুলিয়ে নিলাম কোথায় একটা খটকা লাগলো কিসের যেন অভাব সমস্ত কবিতা জুড়ে আকাশের কাছে গেলাম আমাকে সে শুধুই হাতছানি দিয়ে ডাকে গেলাম মহাশূন্যের কাছে আমায় সে দেখায় অসীমতার বিশালতা সূর্যের কাছে যেতেই বলল, আমি নিজেই শীতলতার অভাবে মরছি কেউ দিতে চায় না একটুখানি কষ্ট যা দিয়ে আমি কবিতায় পূর্নতা আনবো শেষে তোমার কথাই মনে পড়ল মনে পড়লো আজ পর্যন্ত অন্তত এই জিনিষটা দিতে তুমি কখনও কার্পন্য করনি

সবুজ রেলগাড়ি -তুচ্ছ

দ্রুতগামী ট্রেনের পাশাপাশি হাটছি ভাব খানা এমন যে করেই হোক আজ একে পিছে ফেলবই যেমনিভাবে তোমরা আমায় ফেলে গেলে এই নিঃসঙ্গ ষ্টেষনে বর্গাকার সব পথ ছেড়ে যাই ঘাসের উঁচু শিশ্ন আমার পায়ে বরাবরের মত বিধে যায় একপথ ছেড়ে আরেক পথের দিকে পা বাড়াই খাপ পেতে বসে থাকে সন্ত্রাসী দল বাদামের খোসা, সিগারেটের পশ্চাদ অংশ এমনকী কনডমের খালি প্যাকেটও আমার পদ দূলিত হয় আমার কানে পৌছায় না নিরিহ পথিকের আর্তনাদ রাস্তার পাশের ল্যাম্পপোষ্ট গুলো হতাশায় যেন অন্ধ হয়ে গেছে গোপন প্রেমের নিষিদ্ধ চুম্বন বেশ্যা নারীর হাতছানি কোনও কিছুই কোনও কিছুই আজ আমায় চঞ্চল করে তুলে না আমি আমার মাথাকে তার অক্ষের উপর এক চক্কর ঘুড়িয়ে আনলাম অনেক চেনার ভিতরে অচেনার লুকোচুরি সন্তানদের প্রতি বাবার ভালোবাসা সব মিলিয়েই কিম্ভুত এক ছবি আমার গন্তব্য ত্যাগ করে যাই কারণ আমায় যে ট্রেনটিকে হারাতেই হবে

কয়েকটি প্রতিচ্ছবি আর আমার নিশ্চুপ অবলোকন -তুচ্ছ

সেদিন হঠাত্‍ আমার মরা বাপকে দেখলাম 'যৌন সমস্যার সমাধান' শিরোনাম লেখা লিফলেট বিতরণ করছে আমি ভয়ে ছিলাম কখন আবার তাকে দেখি বয়সের ভারে ভেঙ্গে পরে বেশ্যা নারীর দালালী করছে আমার যৌবনহারা বৃদ্ধা 'মা' মুখে তার অনবরত অশ্লীল খিস্তি ছুটে যাচ্ছে অবাধ্য খদ্দেরের প্রতি সেই যে নিছক সন্দেহে গণপিটুনিতে মারা গিয়েছিল ছয় দুর্ধর্ষ ডাকাত তাদের একজন আমারই বড় ভাই যে কিনা প্রতিনিয়ত আমায় বেধরক পিটাত শেষ পর্যন্ত কিনা তারই মৃত্যু হল এই পিটুনির আঘাতে এখন শুধুই সেই ক্ষত চিহ্নগুলোয় হাত বুলোই যদি সেই পুরোনো আঘাতের যন্ত্রণা একটু হলেও উপলব্দি করতে পারি আমার বোন তার সাধের প্রেমিকের সাথে ডেট করতে গিয়ে এখন সম্পূর্ণরুপে ডেড নিজের নগ্ন ছবি প্রতিটি যুবকের সেলফোনে আবদ্ধ দেখলে কয়জনই বা নির্লিপ্ত থাকতে পারে তার ডেডবডি আমি নিজ হাতেই ফাস মুক্ত করি আর আমি সেই পুরোনোই রয়ে গেছি বেওয়ারিশ কুত্তার মত রাস্তায় রাস্তায় আজও ঘুরে বেড়াই ডাষ্টবিনের পঁচা বাশি খাবারের মত আমিও খুজে বেড়াই

একজন মহাপাপী এবং আমি -তুচ্ছ

শেষ পর্যন্ত প্রবল বিরক্তি নিয়ে তাকালাম সামনে বসে থাকা কুলাঙ্গারটির দিকে সবসময় শুনে আসা কথা, মানুষ ঈশ্বরের সৃষ্টি যদি তা সত্য হয়ে থাকে তবে নির্ঘাত এই কুলাঙ্গার ঈশ্বরের তৈরি নয় তার চরিত্রের অবয়ব একেএকে আমার সামনে দৃশ্যমান হতে লাগল দেখলাম নোংরামিতে ভরা একটি আত্মা প্রতিনিয়ত যে কিনা পাপ চিন্তায় বিভোর যে সংসারে তার আগমন, তাতে তার কোনো স্থানই নেই কেই বা দেবে এমন কুলাঙ্গারকে ভালবাসার হাতছানি আকাশের দিকে তাকায়ে যে কিনা হাসিমুখে আকাশের বিশালত্বকে ছোট করে দেখে প্রতিটি পীচঢালা পথে যার নোংরা পদরেখা ঈশ্বরকে সে প্রতিমূহুর্তে হিংসা করে সৃষ্টা হতে পারেনি বলে ভালবাসা যার বিধানের অন্তর্ভুক্ত নয় আর দেখার সাহস হল না আমার শেষবারের মত তার দিকে চোখ বুলিয়ে নিতে গেলাম তাতেই যা বিপত্তি ঘটার ঘটে গেল তার আত্মার যে অংশটি এতক্ষণ আমার কাছ থেকে গোপন করে রেখেছিল তা আমার সামনে হঠাত্‍ উন্মোচিত হল আমি দেখতে পেলাম গভীর দুঃখগুলো যেগুলো তার অন্তরে থরে থরে সাজানো যা কিনা সে কারও সামনে প্রদর্শন করতে আগ্রহী নয় পারলাম না আরে

অসমাপ্ত কবিতা -তুচ্ছ

ভুলগুলো একে একে মিথ্যে হয়ে ধরা দিতে লাগল শিশুর মিথ্যে অভিনয়ের মত মনে হয় চিরন্তন সত্যগুলোকে প্রেয়সীর চুলের আলতো ঝাপটা আঘাত করে না ভালবাসার রূপ নিয়ে মনটা আজ ভীষণ রকম একা হারিয়ে ফেলি ভালবাসার আসল সংঙ্গা খুজে পাই শ্রেষ্ট লাইনটি যা দিয়ে কবিতায় পরিপূর্ণতা আনবো আগের মতই নিঃশঙ্গ পংক্তিগুচ্ছ বারেবারে দোলা দিয়ে যায় অশ্লীল আত্মাকে সহায় সম্বলহীন ভবঘুরে এক কবি আমি অনবরত ধার করেই যার আজ এই পরিণতি আজও ধার করে যাই কবিতার লাইন কিন্তু শেষ রক্ষা আর হয় না সমাপ্ত টানতে পারি না কোনো রকমেই অসমাপ্তই থেকে যায় আমার না লেখা কবিতাগুলো

একটু ভাবনা

মনেকর, এখানে কোনো স্বর্গ নেই এটা খুব সহজ, যদি তুমি চেষ্টা করো আমাদের নিচে কোনো নরক অবস্থান করে না উপরে শুধুই আকাশ মনেকর, এখানে কোনো দেশ নেই এটা ভাবা তেমন কঠিন নয় হত্যা অথবা মৃত্যুকে নিয়ে কোনো ভাবনা নেই এবং কোনো ধর্মও নেই মনেকর, সব মানুষের জীবনে শুধুই শান্তি বিরাজমান তুমি বলতে পারো, আমি তোমাদের স্বপ্ন দেখাচ্ছি কিন্তু শুধু আমি একা নই কিছুদিনের মাঝে তুমিও আমাদের সাথে যুক্ত হবে এবং পৃথিবীতে এক হতে ইচ্ছা পোষণ করবে মনেকর, পৃথিবীতে মালিকানা বলতে কিছু নেই আমি সত্যিই অবাক হব, যদি তুমি এটা ভাবতে পার লোভ অথবা ক্ষুধা বলতে কিছু নেই মানুষের মাঝে বাস করে একটা ভ্রাতৃত্ব মনেকর, সব মানুষ পৃথিবীটাকে সমান ভাগ করে নিয়েছে তুমি বলতে পারো, আমি তোমাদের স্বপ্ন দেখাচ্ছি কিন্তু শুধু আমি একা নই কিছুদিনের মাঝে তুমিও আমাদের সাথে যুক্ত হবে এবং পৃথিবীতে এক হতে ইচ্ছা পোষণ করবে

শূন্যতার সমুদ্র -তুচ্ছ

এদিকে একটু তাকাও আরেকটু ডানে হ্যা, হয়েছে। কি দেখছ? এক বিশাল সমুদ্র যার কোন ঠাই নেই নেই কোন তলানি শূন্যতার সমুদ্র যার মাঝে তুমি আমি বাস করি ডাকছে, আমায় ডাকছে দেখ দেখ বিশাল ঢেউটা আমায় ডাকছে গ্রাস করে নেবে বলে শূন্যতার মাঝে হারিয়ে যাব আজ হাটছি, আর কিছু পথ সম্মুখে শুকনো বালুচরে আমার পা ঢেবে যাচ্ছে অনবরত আর কয়েক মূহুর্ত পরেই আমি সেই তলানি বিহীন সমুদ্রে তলিয়ে যাব আমায় ছিড়ে খুড়ে খাবে সেই শূন্যতারই কিছু হিংস্র শূন্যজ প্রাণী মাঝে মাঝে অদৃশ্য ডুবো জাহাজের সাথে সংঘর্ষ হবে আমার সেই নিঃশেষ দেহটা তবুও আমি নিজেকে বিসর্জন দিতে পেরে আনন্দিত

আমরা যারা নরকবাসি

কিছুদিন যাবত্‍ বারবার একটা প্রশ্ন মনের মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছে। প্রায় প্রত্যেকটি ধর্মগ্রন্থে লেখা আছে, ভাল কাজ করলে, ঈশ্বরের পূজা করলে সত্‍কাজের আদেশ এবং অসত্‍ কাজ থেকে বিরত থাকলে স্বর্গ যাওয়া যায়। আমার জীবনটা এতটাই বিষাক্ত হয়ে গেছে যে মনে হচ্ছে নরকেও বুঝি এর থেকে সুখে থাকতে পারবো। এ জীবনে পাপ কাজ করা হয়ত আর বাকী নেই, ভাল কাজের হালখাতা প্রায় শূন্যই বলা চলে। নিন্দুকেরা প্রতি মূহুর্তে আমার নিন্দা করে বেড়ায়। তারাই শিক্ষা দেয় গীবত করা হারাম এবং তারাই প্রতিনিয়ত আমার নামে গীবত করে যায়। যখন আমি তাদের এই কথা বলি, আমাকে শুনতে হয় তোমার ভালোর জন্যই বলা হচ্ছে। কারও ভাল চাইলে গীবত হয় না। পবিত্র হাদীসে পাকে সুষ্পষ্ট উল্লেখ আছে, তোমরা অন্যের দোষ ত্রুটি গোপন করো, আল্লাহ তায়ালা হাশরের দিন তোমাদের দোষসমূহ গোপন করবেন। তারাই বলে একমাত্র মুহাম্মদ সঃ জীবনে কোনো পাপ করেননি। তারপরও তিনি প্রতিনিয়ত ক্ষমা প্রার্থনা করতেন, কিন্তু পুনরায় তারাই আমার সাথে এমন ভাব নিয়ে কথা বলে যেন তাদের মত পূতপবিত্র বান্দা আর সৃষ্টি হয়নি। শেষকথাঃ (নিছক কল্পনামাত্র) এই পৃথিবী নামক স্থানটি আসলে আর কিছুই না, এ হল হাবিয়া

আমার ভুল ভাবনাগুলো

ঈশ্বরকে নিয়ে সেই ছোটবেলা থেকেই আমি প্রবল আগ্রহী ছিলাম। জানতে চেষ্টা করতাম তাকে নিয়ে, কিন্তু ছোট থাকার কারণে বুঝতামও কম, অবশ্য তখন জানার তেমন একটা সুযোগ ছিল না। আস্তে আস্তে যত দিন যেতে লাগল, আমার শিখার ক্ষেত্রেও বড় হতে শুরু করল। মোটামুটি ধরনের বই পড়ে অথবা সেই বইয়ের দ্বারা আমার যেসব নতুন চক্ষু গজিয়েছে তার মাধ্যমে অনেক কিছু উপলব্দি করতে শিখেছি। প্রথমেই জানিয়ে রাখা ভাল আমি পৈতৃক সৃত্রে একজন মুসলমান। স্বভাবতই আমার অন্য ধর্মকে ঘৃণা করা উচিত্‍। কিন্তু বাধ সাধলো যখন বুঝতে পারলাম, যদি আমি স্বর্গে প্রবেশ করার অধিকার রাখি (ইসলাম ধর্ম মতে) তবে একজন বিধর্মীও সে অধিকার রাখে। কারণ, আমি মুসলমান হয়েছি আমার পিতা মুসলমান ছিলেন বিধায়। এ শর্তে যদি আমার পিতা হিন্দু ধর্মাবলম্বী হতেন তবে আমিও হিন্দুই হতাম। এখন আমি যেভাবে নামায পড়ছি রোজা রাখছি, তেমনিভাবে তখনও পূজা আর্চণায় ব্যস্ত থাকতাম। তবে আমার আর একজন হিন্দু ছেলের মধ্যে পার্থক্যটা কোথায় থাকলো? সে তো আর ইচ্ছা করে হিন্দু বাবার ঘরে জন্ম নেয় নি। এর বিপরীতে একটা প্রশ্ন জাগতে পারে, আল্লাহ তো তোমাকে বিবেক দিয়েছে। মানলাম আল্লাহ আমাকে বিবেক দিয়েছে এবং

যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রসঙ্গে

বর্তমানে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার সম্পর্কে ব্যাপকহারে আলোচনা সমালোচনা হচ্ছে। প্রকৃত বাঙ্গালী অবশ্যই এদের বিচার আশা করবে, এটাই স্বাভাবিক। তেমনিভাবে আমিও করি।এখনও জানিনা প্রকৃত বাঙ্গালী হতে পেরেছি কিনা। কিন্তু কথা হল, যাদের জন্য এই বিচার তারা কি শুধুই এর বিচারের দাবীতে যুদ্ধ করে নিজেদের প্রাণ অকাতরে বিলিয়ে দিয়েছেন? তারা চেয়েছেন, এই দেশটি হবে শান্তির দেশ। যাতে থাকবে না কোনো ধর্ম বৈশম্য, থাকবে না অত্যাচার অথবা নিপীড়ন। কিন্তু আজ যারা যুদ্ধাপরাধীদের বিচার নিয়ে এত এত মাতামাতি করছে, তারা কি একটিবার ভেবে দেখেছে, তারাই সবচেয়ে বড় অপরাধ করছে। তারা একজন মানুষকে জোর করে মহত্‍ বানানোর প্রয়াসে, সমস্ত বাঙ্গালী জাতিকে ধ্বংশের মুখে ঠেলে দিচ্ছে। আর আরেকদল নিজের অকর্মা পুত্রদের বাচানোর জন্য কেড়ে নিচ্ছে গরীব দুঃখীদের মুখের খাদ্য। লাগাতার হরতাল, ধর্মঘট দিয়ে জনজীবন করে তুলছে অতীষ্ঠ। আমার ক্ষমতা থাকলে সবার আগে এদের বিচার করার সিদ্ধান্ত নিতাম। আহারে আমার বিশ্বনেত্রীরা, একজন নোবেলের চিন্তায় বিভোর, আরেকজন ক্ষমতার লোভে ক্ষিপ্র জানোয়ার। বাংলায় ভাষণ দিলেই দেশ প্রেম প্রদর্শিত হয় না। এর জন্য প্রয়োজন দেশের যথায

কিম্ভুত অপরুপা

আজ হঠাত্‍ সময় আমার সামনে স্থির হয়ে গেছে প্রতিনিয়ত মনে হচ্ছে সময়যন্ত্রে আরোহী অধিনায়কের দ্বায়িত্বে দন্ডায়মান নির্ভীক সৈনিক সকল অন্যায়কে আমার নেতৃত্বে অতীতে ফেলে আসবো রেখে আসবো কালো গহ্বরের একেবারে শেষ খন্ডে তোমরা প্রত্যাশা কর না কেন ফিরিয়ে তোমরা আনতে পারবে না কিছুতেই কোথায় আমার কিম্ভুত অপরুপারা কোথায়

অপ্রাকৃতিক -তুচ্ছ

১লা আগষ্ট। রাত ১২.০২ ঘন্টা। রোজ রবিবার, বিশ্ব বন্ধুত্ব দিবস। ক্রিং ক্রিং ক্রিং। নাত্রিতার মোবাইল ফোন বেজে উঠলো। হ্যালো। গালিব মৃদুকন্ঠে বলল। হু। নাত্রিতার সংক্ষিপ্ত উত্তর। হ্যালো ময়না পাখো? বলো কী খবর? জানি না। তোমার খবর তুমি জানো না? না তুমি কি আমার উপর রাগ করছো জানি না শুধু জানি না, জানি করতাছো কেন? তো কী করবো? পাখো, সত্যি I love you. ঢং করবা না। ঢং কই করলাম, সত্যি পাখো তোমারে অনেক ভালবাসতে ইচ্ছা করে তো আমার উপর রাগ করছো কিনা বলো? না সত্যি হু, সত্যি থ্যাংস, পাখো কী করো? শুয়ে আছি আচ্ছা চলো না, আমরা কোথাও ঘুরে আসি কোথায়? তোমার যেইখানে মন চায় কখন কালকে সকালে, তুমি কলেজে গেলে ঐখানে আমি থাকব। এরপর তুমি আর আমি বের হয়ে যাব। হারিয়ে যাব অনেক দূরে। আমার ভয় করে কেন্ এই শহরের সব জায়গায় আমার আত্মীয় স্বজন আছে তোমার আত্মীয় স্বজনদের আর খাইয়্যা দাইয়্যা কাম নাই তো, খালি তুমি কই যাও, কার লগে ঘুরো তারা শুধু তা খুইজ্যা বেড়াইবো তাই না? না, আমার ভয় করে HB তুমি কি আমারে বিশ্বাস করো না? না, না, HB সত্যি আমার ভয় করে। যদি কেউ দেখে ফেলে? নাত্রিতার ভীত কন্ঠে জবাব। যদি কেউ দেখে ফেলার থাকে, তবে যে কোন ভাবেই দেখতে

স্বপ্নাহুতি -তুচ্ছ

আজ সব স্বপ্নকে জলাঞ্জলি দিয়ে আসলাম আর কখনও স্বপ্ন দেখব না আমাকে নিয়ে দেখব না, তোমাকে নিয়েও রেল রাস্তা ধরে হেঁটে যেতে আর দেখা যাবে না আমার স্বপ্নগুলোকে আকাশটা দেখে আর কখনও ছুতে ইচ্ছে করবে না রাতে মায়ের বকুনি স্বত্বেও ঘরে ফেরার তাড়না থাকবে না হাতে হাত রেখে আর কখনও বৃষ্টিতে ভেজার স্বপ্ন দেখব না দেখব না, মায়ের জন্য একটা টুকটুকে বৌ এনে দিতে যে কিনা আমার চেয়ে মাকে নিয়েই বেশি ব্যস্ত থাকবে কবিতার মাঝে শব্দচয়নের মাধুর্য খুজে পাবো না পকেটে টাকা না থাকা স্বত্ত্বেও স্বর্ণ পাতার কুন্ডলিতে টান দিতে চাইব না ঈদ উপলক্ষে শৈল্পিকের দামী কোন পাজ্ঞাবী আশা করব না আদরের ভালবাসা থেকে রাস্তার কোনো ডানাকাটা পরীকে দেখে পাশে পাওয়ার স্বপ্ন দেখব না যান্ত্রিক ফড়িংয়ের পাকস্থলিতে বসে উড়ে যাব না দূর দেশে আমায় থেকে কোনো শিষ্য শিখবে পাবে না সত্যের বিষ্ময় বন্ধুদের কাছ থেকে লুকিয়ে রাখব নতুন কোনো চিন্তার খোরাক দুই টান বিড়িতে ভাগ বসাতে যাব না কোনো অনাত্মীয়ের কাছ থেকে আমার বাবার মত হাতেম তাইয়ের উত্তরসূরি মায়ের মত সহজ, নির্লিপ্ত

অকাল তুচ্ছ

কাল রাতে ঘুমাতে পারিনি বললেই চলে। অনেক কিছু নিয়ে চিন্তা করছি, কিন্তু কোনো চিন্তার শেষ দেখতে পারিনি। কয়েকদিন যাবত্‍ প্রবল হতাশায় ভুগছি। জানি না কী জন্য এই হতাশা। জীবনের উদ্দেশ্য হারিয়ে ফেলেছি অনেক আগেই, এককালে কবিতা লিখে শান্তি পেতাম, হয়ত পেতাম না, শান্তির ভান করতাম। এখন শান্তিতো পাই না, ভানও করতে পারি না। এই মূহুর্তে যা মাথায় আসছে তাই লিখছি। শান্তির ভান করে লিখছি। শরীরটা কেমন হাল্কা হয়ে যাচ্ছে। কাল রাতে ইচ্ছা করছিল আত্মহত্যাই করে ফেলি, কিন্তু সেই চিরাচরিত ভয়ের কারণে কালকেও করা হয়ে উঠে নি। আমি এখনও জানতে পারিনি, আমি কে? এবং এটাই আমার সবচেয়ে বড় হতাশার কারণ হয়ে দাড়িয়েছে। ভবিষ্যত জেনে গেলে নাকী, মানুষ আর বাঁচতে চায় না। আমি জেনে গেছি, তাই আমিও বাঁচতে চাই না। যত তাড়াতাড়ি মরতে পারি ততই সুখ। কেউ একজন যদি কপালে হাত রেখে খুব স্নেহের সহিত বিষের পাত্র হাতে তুলে দেয়, আমি নির্ভিগ্নে গলায় তুলে নেব। তার চেয়ে পরম কাউকে মনে হবে না এই মূহুর্তে। জীবনের অনেক গভীরে বাস করছি বলে মনে হয়, প্রতিটি মূহুর্তকে গনণা করতে পারছি। আইষ্টাইনের আপেক্ষিকতার সূত্র আমার ক্ষেত্রে ভুল মন

সূর্যের ছায়া -তুচ্ছ

অবয়বটা ঠিক যেন ঐ চেহারার মত যে মুখখানি আমি ভুলে বসে আছি তুমি তোমার সন্তানকে আমার মস্তকের উপর ঢেলে নত মস্তক উন্নত করতে সাহায্য কর বিশাল ভাঙ্গা ভাঙ্গা সমুদ্রের ন্যায় মেঘগুচ্ছ হ্যা, মেঘগুচ্ছইতো! কি সুন্দর তোমার অবয়ব তা কি না দেখলে কেউ বলতে পারবে? তুমিতো ঐ রমনীর সোনার বালার কুহু গুঞ্জন যার ধ্বনিতে আমার ঘুম ভাঙ্গে না কিন্তু ঘুম ভাঙ্গলেই আমি অবাক হয়ে যাই সেই বজ্র ধ্বনি শুনে আবার কিশোরীর ঐ ভেজা চুলের ছোয়া কোথায় যেন মিল খুজে পাই, তোমার সন্তান প্রসবের সময় তুমি কি একটুকরো জল আমাকে দান করবে আমি আমার মুখমন্ডলকে থালা বানিয়ে তোমার পথ চেয়ে বসে আছি আমাকে একটু দাও আমি সেই অমিয় সুধা পান করে পবিত্র হতে চেষ্টা করি যাতে আমি সূর্যের ছায়ার নিচে অবস্থান করতে পারি

জীবিতের ডেডবডি -তুচ্ছ

তুমি কি আমাকে চিনেছো আমি সেই জন, যাকে তুমি চেনো না আমায় তুমি ভালবেসেছো সেইভাবে যেভাবে তুমি ভালবাসতে শেখনি হয়ত তুমি কুশ্রী কিন্তু আমি যে তোমায় ভালবেসে ফেলেছি ফাসির কাষ্ঠে ঝুলন্ত কাপড় রোদে শুকোয় না আমি কি পারবো আমার মনটাকে তোমার জন্য শুকাতে এত বৃহত্‍ জগত সংসারে কি আমি তোমাকেই ভালবাসবো না তুমি আমায় চিনতে পারবে না কারণ তুমি যে আমারই ঐশ্বর্য অপরকে চেনা তো খুবই সহজ আমি কি চিনবো সেই আত্মাকে যে আত্মার সৃষ্টি এই আত্মা হতে আমার আত্মাতো তুমিই তোমাকে ছাড়া যে আমি স্বয়ং ডেডবডি

বহুনির্বাচনী ভালবাসা

১ম পর্বঃ ছবিটা দেখতে দেখতে নিজেই সম্মোহিত হয়ে গেল প্রায়। কী যেন একটা আছে ছবিটাতে। যদিও এটা কাল্পনিক ব্যতীত অন্যকিছুই নয়, তবুও বাস্তবিকেই সম্মোহিত করে তুলে। ঘুম লেগে আসছিল ছবিটা দেখতে দেখতে, এমন সময় অনির ফোন আসলো। হ্যালো। কিরে কী খবর তর? অনির মিষ্টি গলা ভেসে আসল ওপাশ থেকে। হ, ভালা । তুই এইতো আছি কোনোরকম। কোনরকম ক্যা? আজব! তুমি আমারে ভালবাসবা না, তাইলে কও ভালা থাকি কেমতে? ঢং করবি না তর কাছে তো সবই ঢং। ওরে আমার ভালবাসারে, তুই জানস আমার বয় ফ্রেন্ড আছে। তারপরও তুই এরাম করস কেন? তরে তো আমি কই নাই, তর বয় ফ্রেন্ডরে ছাড়তে হইব। আমার লগে ভালবাসার অভিনয় হইলেও করনা প্লীজ! পারুম না, যা ভাগ এরাম করস ক্যান? একটু বাস না ভাল আমি রাখলাম ঐ ঐ, অনি প্লীজ রাখিস না, প্লীজ প্লীজ ক, কী কবি ভালবাসুম তো বাস না, ধইরা রাখছে কেডায় একতরফা ভালবাসা হয়না। আইচ্ছা খাড়া, হেডফোনডা লাগাই লই এই মেয়েটা তাকে কিছুতেই বুঝতে চাচ্ছে না। এই ভেবে মনটা আবার খারাপ হয়ে গেল তার। সিগারেট একটা ধরিয়ে দুই টান দিয়ে পার্থর একটা গান গুনগুন করে ভাজতে লাগল, আমি ভুলে যাই তুমি আমার নও আমি ভুলে যাই তুমি আমার নও ঐ থাম ভ্যাওয়া ব্যাঙ। আচ্ছা তুই আ

একটি মেয়ের লেখা কিছু কবিতা।

১.পাখিরা আকাশে উড়ে নীচে পড়ে ছায়া প্রেম করে দূরে গেলে ভুলে যায় মায়া ২. ভাইয়া তুমি চাঁদের মত সূর্যের মত আলো কেমন করে লেখব চিঠি আমি যে খুব কালো ৩. চাঁদ সুন্দর ফুল সুন্দর আরও সুন্দর তুমি এই দুনিয়ায় দুটি প্রান তুমি আর আমি ৪.সামনে তোমার চাঁদের পাহাড় পিছনেতে আমি এবার বলো, কোনটা নিবে কোনটা বেশি দামী ৫. আম গাছে আম কদু গাছে কদু মেয়েদের বুকেই নাকী ছেলেদের মধু ৬. কোথায় রাখি এই উপহার সাত আকাশের তারা আর কিছু নেই আমার তো হৃদয়খানি ছাড়া ৭. কুটুম পাখি কুটুম পাখি তুমি কুটুম কার আমি বলি আমার কুটুম সে বলে তার আমার কাছে এলে তোমায় দেব খুশির চুম মজার মজার স্বপ্ন দেব দু চোখ ভরা ঘুম

আমাকে লেখা এক রমণীর প্রেমপত্র

HB, Plz আবারও বলছি, নিজের দিকে একটু খেয়াল রাখো। বেশি খাওয়ার দরকার নেই, অন্তত সময়মত খাও। তুমি ডাক্তার কখন দেখাবা? আগামী শুক্রবারে তুমি ডাক্তারের কাছে যাবা, সঙ্গে আমাকেও নিয়ে যাবা। তুমি ঐদিন আমার মাথায় হাত দিয়ে বলেছিলে যে আর কখনও .........। কিন্তু কার কথা কে শুনে, তোমার কাছে আমার কথাগুলোর কোনো মূল্যই নেই। এখন যদি আমার জায়গায় অন্য কেউ থাকত সে ঠিকই তোমাকে কন্ট্রোলে নিয়ে আসতো। কিন্তু কেন পারছিনা আল্লাহই জানে। আমি আর তোমাকে কিচ্ছু বলবনা। তুমি এখন অনেক বুড়া হইছো(খিকজ)। নিজেরটা নিজেই ভাল বুঝবা। তারপরও আমার কথাও একটু স্বরণে রাখিও। তোমার কাছ থেকে আমি অনেক কষ্টই পেয়েছি, তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে যখন তুমি আমার কথাগুলোকে পাত্তা দাওনা। তারপরও..... পুনশ্চঃ অনেক কষ্টে এডিটিং করার ইচ্ছা দমন করছি। ইচ্ছা ছিল আরও কিছু মাল মশলা যুক্ত করব। কিন্তু পরে ভাবলাম, তখন চিঠির মৌলিক গুণাবলি নষ্ট হয়ে যাবে। তাই প্রায় অপরিবর্তনীয়ই রাখলাম।

স্বার্থপরতা

মানুষ বড়ই আজিব প্রাণী। আসলে মানুষ যে কী জানে না, তাই জানে না। আবার কী জানে তাও জানে না। কিন্তু ভাবতে গেলে দেখা যাবে, সে অনেক কিছুই জানে। একই সাথে কোন কিছুই জানে না। যেমন এই কথাগুলো কেন লিখছি আমি নিজেও তা জানি না। আসলে আমার মনটা কিছুদিন যাবত্‍ খুব খারাপ যাচ্ছে। এই কয়েকদিন আমি আমার সম্পর্কে যা যা চিন্তা করেছি, তা যদি কোন ভাবে লিপিবদ্ধ করতে পারতাম, তাহলে হয়তো আমার স্বভাব বা প্রকৃতি সম্পর্কে একটা সঠিক ধারণা আমি নিজে পেতাম। আজকাল নিজেকেও বড় অচেনা লাগে। কিন্তু দুঃখের বিষয় আমি আমার চিন্তা ভাবনাগুলো লিপিবদ্ধ করতে পারি না। কারণ আমার মন যেভাবে চিন্তা করে, হাত সেভাবে চলে না। যদি মনের ছায়া হাতের মাধ্যমে ফেলা যেত, তাহলে মানুষ আজ এত দূরে এগিয়ে যেতে পারত, যা কেবল সায়েন্স ফিকসনেই সম্ভব। স্বার্থপরতা নিয়ে চিন্তা করছিলাম কিছুদিন যাবত্‍। এই বিষয় নিয়ে লেখতে শুরু করার কারণ হতে পারে, নিজেকে নিঃস্বার্থবান প্রমাণ করা। এবং এটাই সবচেয়ে বড় স্বার্থপরতা নয়? কিছু মনে করবেন না, আমি লেখার মাঝে আমার মনের ছায়া ফেলার চেষ্টা করছি। যদিও জানি বৃথা চেষ্টা। এটা কখনও পুরোপুরি সফল হবেনা। মানুষ কখনও স্বার্থপর হওয়া

ছেঁড়া নোঙ্গর -তুচ্ছ

একটা আঁধার চাই আঁধার নিকষ গাঢ় অন্ধকার থকথকে পিচ্ছিল আর নিঃস্বার্থবান আঁধার এই পটভূমিতে কালো অন্ধ পদরেখা মোর হেঁটে যাই গৃহ পথ পানে খুজে যাই সেই পুরোনো আঁধার আর না পাওয়া প্রিয়তমাকে দেয় সে জোর হাতছানি ডাকে মোরে তার কাছে ভেবে হই দিশেহারা মরীচিকা যদি হয় পাছে আবারও অতলে যাই তলায়ে যাই ভুলে তার পথ দেখেনু হৃদয় ভেঙ্গে মোর আজ হয়েছে তীক্ষ্ন ক্ষত ফিরিব আবার তাই বুঝি আমি ডুবেছি ভুলের সাগরে মন নৌকৌ আজি মেলিছে পাল ঘুণ ধরেছে ছেঁড়া নোঙ্গরে

অনর্থক ইচ্ছে -তুচ্ছ

প্লাটফর্মে বসে সুন্দরী রমনীদের দিকে চেয়ে থাকতে ইচ্ছে করছে ইচ্ছে করছে অমূল্য একখানা কবিতা রচনা করতে মায়ের হারিয়ে যাওয়া নোলকটা ফিরিয়ে আনতে পূর্ণিমার চাঁদটাকে রুটি না ভেবে আলোয় ভাসতে ইচ্ছে করছে তোমার উষ্ণ ঠোঁট ছুয়ে একটা চুমু দিতে আবার সেই ফেলে আসা প্রেমিকার হাত ধরতে সেই পুরোনো ছায়ার মাঝে হারিয়ে যেতে কিম্ভুত একটা অশ্লীল আঁকতে ইচ্ছে করে আগুনের তাপে শরীরে বওয়া পাপগুলো ঝলসে ফেলতে আর একবার শুধু একবার মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে

অকাল তুচ্ছ (২) -তুচ্ছ

এই সেই পুরোনো আত্মা যাকে দিনরাত সূর্যালোকের ছায়ায় খুজেছি অতীত বিশ্বাসে ডুবন্ত পাতার ন্যায় শেষবারের মত নিঃশ্বাস ফেলতে চেয়েছি ক্ষুদার তাড়ণায় চেয়েছি দু চারটে বাসি ভাতও নাঃ দেয়নি কেউ চায়নি ফিরে আমার মত অশ্লীলের দিকে আমি বারেবারে হাত পেতেছি ভিক্ষুক বেশে তোমাদের মুখে 'মাফ করো' ছাড়া অন্যকোন কথা জুগায়নি আমি নাকি অকাল তুচ্ছ অনেক আগেভাগেই আমি তুচ্ছ হয়ে গেছি তোমাদের মাঝে আমায়তো কেউ ফিরে পেতে চায়নি অবশ্য কার কাছে বা এমন নালিশ করব সবাই বলে, আমি দুখি আমি দুখি কেনো এত মিথ্যে প্রমাণের প্রচেষ্টা কেনো সবাই হতাশার ছোবল থেকে রেহায় পায় না আমাকে নাহয় নাইবা চাইলে তাতে এমন কী এসে যায় আমি তুচ্ছ তুচ্ছই নাহয় থেকে গেলাম তাই আজও আমি পথে পথে ঘুড়ে বেড়ায় একজন হাতেম তাইয়ের খুজে যে কিনা তার দ্বার খুলে আমার অপেক্ষায় নিদ্রামগ্ন

জারজ কবিতা -তুচ্ছ

সেদিন কি বার যেন ছিল ঠিক মনে নেই দিনক্ষণ আগের মত আর হিসেবে থাকে না বয়স হয়েছে তো আগের মত ভালবাসার ছলনাও করতে পারিনা মাঝে মাঝে সতিচ্ছেদ করার সাহস জাগে না আর ভুলে গেছি পূর্বের জনমের শেষ সঙ্গমের কথা যে সঙ্গম শিখতে আদম আর ঈভের গন্ধম ফল খেতে হয়নি তাই লিখা শুরু করছি অশ্লীল কবিতা যে কবিতার এক একটি লাইন তোমার বস্ত্রহরণ করবে আর আমার লোভী চোখ তোমায় দৃষ্টি ভক্ষণ করবে আর সেই দৃষ্টি ভক্ষণের বীর্যপাতে তোমার গর্ভে আসবে একটি জারজ সন্তান যার জনক আমি নই।

শেষ ইচ্ছে -তুচ্ছ

আমার আত্মহুতির কিছু আগে, নিজের কাছে জানতে চাইলাম তোমার শেষ ইচ্ছে কী অনেক ভেবেও প্রিয় খাবারের নামটা স্মরণ করতে পারলাম না। তেমন কাছের মানুষতো কেউ নেই তাই কারো সাথে দেখাও করতে চাইনা কোনো নাটকের কথা মনে পড়ল না, যা দ্বিতীয় বার দেখতে ইচ্ছে করে পেলে অথবা মারাদোনার অটোগ্রাফ জমানোর শখ জাগেনি প্রেমিকার গুটিয়ে নেয়া হাত দুখানি ট্রেনের ছাদে চড়ে অজানা উদ্দেশ্যে বেড়িয়ে যাওয়া বৃষ্টির শীতল ছাঁটে শেষবারের মত ভিজতে সেই ছোটবেলার মত, মায়ের কোলে মাথা রেখে আরেকবার ঘুমাতে মন চায়নি চাইনি মৃত বাবার পকেট থেকে সিগারেটের টাকা একটুখানি সহানুভূতি অথবা মন পাগল করা গানটি শুধু চাই, মৃত্যুর পরও কবিতা লিখতে পারার মত কবিত্ব শক্তি।

হাজার বর্ষ আগে - জীবনানন্দ দাশ

সেই মেয়েটি এর থেকে নিকটতর হ’লো না : কেবল সে দূরের থেকে আমার দিকে একবার তাকালো আমি বুঝলাম চকিত হয়ে মাথা নোয়ালো সে কিন্তু তবুও তার তাকাবার প্রয়োজন – সপ্রতিভ হয়ে সাত-দিন আট-দিন ন-দিন দশ-দিন সপ্রতিভ হয়ে — সপ্রতিভ হয়ে সমস্ত চোখ দিয়ে আমাকে নির্দিষ্ট করে অপেক্ষা করে — অপেক্ষা ক’রে সেই মেয়েটি এর চেয়ে নিকটতর হ’লো না কারণ, আমাদের জীবন পাখিদের মতো নয় যদি হ’ত সেই মাঘের নীল আকাশে (আমি তাকে নিয়ে) একবার ধবলাটের সমুদ্রের দিকে চলতাম গাঙশালিখের মতো আমরা দু’টিতে আমি কোন এক পাখির জীবনের জন্য অপেক্ষা করছি তুমি কোন এক পাখির জীবনের জন্য অপেক্ষা করছো হয়তো হাজার হাজার বছর পরে মাঘের নীল আকাশে সমুদ্রের দিকে যখন উড়ে যাবো আমাদের মনে হবে হাজার হাজার বছর আগে আমরা এমন উড়ে যেতে চেয়েছিলাম।

সূর্যকরোজ্জ্বলা-জীবনানন্দ দাশ

আমরা কিছু চেয়েছিলাম প্রিয়; নক্ষত্র মেঘ আশা আলোর ঘরে ঐ পৃথিবীর সূর্যসাগরে দেখেছিলাম ফেনশীর্ষ আলোড়নের পথে মানুষ তাহার ছায়ান্ধকার নিজের জগতে জন্ম নিল- এগিয়ে গেল; - কত আগুন কত তুষার যুগ শেষ করে সে আলোর লক্ষ্যে চলার কোন্‌ শেষ হবে না আর জেনে নিয়ে নির্মল নির্দেশ পেয়ে যাবে গভীর জ্ঞানের, - ভেবেছিলাম, পেয়ে যাবে প্রেমের স্পষ্ট গতি সত্য সূর্যালোকের মতন; - ব’লে গেল মৃত অন্ধকারে জীবিতদের প্রতি। জীবিত, মানে আজ সময়ের পথে বালি শিশির ধুলোর মতো কণা মিলিয়ে তাদের প্রাণের প্রেরণা ক্রমেই চরিতার্থ হতে চায়। চারদিকে নীল অপার্থিবতায় সোনার মতন চিলের ডানায় কোনো খাদ মেশানো নেই, তবু তার প্রাণে কোটি বছর পরে কোনো মানে বার করেছে মন কি প্রকৃতির? মানুষ তবু পাখির চেয়ে ঢের অমৃতলোক হাতের কাছে পেয়ে তবু কি অমৃতের? মানুষ আমি,- মানুষ আমার পাশে হৃদয়ে তার হৃদয় মেশালেও ব্যক্তি আমি ব্যক্তিপুরুষ সে-ও; দ্বীপের মতন একা আমি তুমি; অনন্ত সব পৃথক দ্বীপের একক মরুভূমি: যে যার পরিপূর্ণ অবিশ্বাসে র’য়ে গেছে;- সেখান থেকে ব্যাজস্তূতি কপট প্রণয় ভয় দেখ কেমন উৎসারিত হয়; প্রাণের প্রয়াস রয়েছে তবু, তাই দেখেছি মানুষ অনর্গল অন্ধকারে মরে মানবকে তার প্রত

সামান্য মানুষ-জীবনানন্দ দাশ

একজন সামান্য মানুষকে দেখা যেতো রোজ ছিপ হাতে চেয়ে আছে; ভোরের পুকুরে চাপেলী পায়রাচাঁদা মৌরলা আছে; উজ্জ্বল মাছের চেয়ে খানিকটা দূরে আমার হৃদয় থেকে সেই মানুষের ব্যবধান; মনে হয়েছিলো এক হেমন্তের সকালবেলায়; এমন হেমন্তের ঢের আমাদের গোল পৃথিবীতে কেটে গেছে; তবুও আবার কেটে যায়। আমার বয়স আজ চল্লিশ বছর; সে আজ নেই এ-পৃথিবীতে; অথবা কুয়াশা ফেঁসে-ওপারে তাকালে এ-রকম অঘ্রাণের শীতে সে-সব রূপোলি মাছ জ্ব’লে ওঠে রোদে, ঘাসের ঘ্রাণের মতো স্নিগ্ধ সব জল; অনেক বছর ধ’রে মাছের ভিতরে হেসে খেলে তবু সে তাদের চেয়ে এক তিল অধিক সরল; এক বীট অধিক প্রবীণ ছিল আমাদের থেকে; ওইখানে পায়চারি করে তার ভূত- নদীর ভিতরে জলে তলতা বাশেঁর প্রতিবিম্বের মতন নিখুঁত প্রতিটি মাছের হাওয়া ফাল্গুনের আগে এসে দোলায় সে-সব। আমাদের পাওয়ার ও পার্টি-পলিটিক্স জ্ঞান-বিজ্ঞানে আরেক রকম শ্রীছাঁদ। কমিটি মিটিং ভেঙে আকাশে তাকালে মনে পড়ে- সে আর সপ্তমী তিথি চাঁদ।

আশাগুলি – নির্মলেন্দু গুণ

জ্যা-মুক্ত হয়নি চিত্ত অধীর মিলনে কোনোদিন। পরশে খুলেছে দ্বার, বারবার কেটেছে অস্থির ঘুমে শূন্য চিরশয্যা তুমি-হীন। অপক্ব মৈথুনে বিবসনা শ্লীলতা ভাঙেনি শব্দ, আমাদের অবিমৃষ্য যুগলযৌবন অথচ জেগেছে কামে সুপ্তোত্থিতে, প্রিয়তমে মুখর মৃণালে, প্রিয় নামে। তোমাকে বেসেছি ভালো তীব্রতম বেদনার লাগি। মৃত্যুর শিয়রে বসি সেই প্রিয় মুখে রাত্রি জাগি একদিন উচ্চরিত প্রার্থনার ভাষা; করেছিনু আশা, আজ পূর্ণ হবে।

হুমায়ুন আজাদের প্রবচন গুচ্ছ

মহামতি সলোমনের নাকি তিন শো পত্নী, আর সাত হাজার উপপত্নী ছিলো। আমার মাত্র একটি পত্নী। তবু সলোমনের চরিত্র সম্পর্কে কারো কোনো আপত্তি নেই, কিন্তু আমার চরিত্র নিয়ে সবাই উদ্বিগ্ন। বাঙলার প্রধান ও গৌণ লেখকদের মধ্যে পার্থক্য হচ্ছে প্রধানেরা পশ্চিম থেকে প্রচুর ঋণ করেন, আর গৌণরা আবর্তিত হন নিজেদের মৌলিক মূর্খতার মধ্যে। বাঙালি মুসলমানের এক গোত্র মনে করে নজরুলই পৃথিবীর একমাত্র ও শেষ কবি। আদের আর কোনো কবির দরকার নেই। বাঙালি যখন সত্য কথা বলে তখন বুঝতে হবে পেছনে কোনো অসৎ উদ্দেশ্য আছে। আধুনিক প্রচার মাধ্যমগুলো অসংখ্য শুয়োরবৎসকে মহামানবরূপে প্রতিষ্ঠিত করেছে। অধিকাংশ রূপসীর হাসির শোভা মাংসপেশির কৃতিত্ব, হৃদয়ের কৃতিত্ব নয়। পাকিস্তানিদের আমি অবিশ্বাস করি, যখন তারা গোলাপ নিয়ে আসে, তখনও। পাকিস্তানিদের আমি অবিশ্বাস করি, যখন তারা গোলাপ নিয়ে আসে, তখনও। শৃঙ্খলপ্রিয় সিংহের থেকে স্বাধীন গাধা উত্তম। বাঙলায় তরুণ বাবরালিরা খেলারাম, বুড়ো বাবরালিরাভণ্ডরাম। প্রাক্তন বিদ্রোহীদের কবরে যখন স্মৃতিসৌধ মাথা তোলে, নতুন বিদ্রোহীরা তখন কারাগারে ঢোকে, ফাসিঁকাঠে ঝোলে। একনায়কেরা এখন গণতন্ত্রের স্তব করে, পুজিঁপতিরা ব্যস্ত থাকে সমাজ

এবারই প্রথম তুমি – নির্মলেন্দু গুণ

ভুলে যাও তুমি পূর্বেও ছিলে মনে করো এই বিশ্ব নিখিলে এবারই প্রথম তুমি। এর আগে তুমি কোথাও ছিলে না ছিলে না আকাশে, নদী জলে ঘাসে ছিলে না পাথরে ঝর্ণার পাশে। এবারই প্রথম তুমি। এর আগে তুমি কিছুতে ছিলে না। ফুলেও ছিলে না, ফলেও ছিলে না নাকে মুখে চোখে চুলেও ছিলে না। এবারই প্রথম তুমি। এর আগে তুমি এখানে ছিলে না এর আগে তুমি সেখানে ছিলে না এর আগে তুমি কোথাও ছিলে না। এবারই প্রথম তুমি। রাতের পুণ্য লগনে ছিলে না নীল নবঘন গগনে ছিলে না। এবারই প্রথম তুমি। এর আগে তুমি তুমিও ছিলে না। এবারই প্রথম তুমি।

বাংলা ভাষা - আতুলপ্রসাদ সেন

মোদের গরব, মোদের আশা, আ-মরি বাংলা ভাষা! তোমার কোলে, তোমার বোলে, কতই শান্তি ভালোবাসা! কি যাদু বাংলা গানে! গান গেয়ে দাঁড় মাঝি টানে, গেয়ে গান নাচে বাউল, গান গেয়ে ধান কাটে চাষা! বিদ্যাপতি, চণ্ডী, গোবিন্‌, হেম, মধু, বঙ্কিম, নবীন- ঐ ফুলেরই মধুর রসে, বাঁধলো সুখে মধুর বাসা! বাজিয়ে রবি তোমার বীণে, আনলো মালা জগৎ জিনে! তোমার চরণ-তীর্থে আজি, জগৎ করে যাওয়া-আসা! ঐ ভাষাতেই নিতাই গোরা, আনল দেশে ভক্তি-ধারা, আছে কৈ এমন ভাষা, এমন দুঃখ-শ্রান্তি-ন াশা? ঐ ভাষাতেই প্রথম বোলে, ডাকনু মায়ে ‘মা, মা’ বলে; ঐ ভাষাতেই বলবো হরি, সাঙ্গ হলে কাঁদা হাসা! মোদের গরব, মোদের আশা, আ-মরি বাংলা ভাষা!