Skip to main content

হুমায়ুন আজাদের প্রবচন গুচ্ছ

মহামতি সলোমনের নাকি তিন শো পত্নী, আর সাত হাজার
উপপত্নী ছিলো। আমার মাত্র একটি পত্নী। তবু সলোমনের
চরিত্র সম্পর্কে কারো কোনো
আপত্তি নেই, কিন্তু আমার চরিত্র নিয়ে সবাই উদ্বিগ্ন।


বাঙলার প্রধান ও গৌণ লেখকদের মধ্যে পার্থক্য হচ্ছে প্রধানেরা
পশ্চিম থেকে প্রচুর ঋণ করেন, আর গৌণরা আবর্তিত হন
নিজেদের মৌলিক মূর্খতার মধ্যে।

বাঙালি মুসলমানের এক গোত্র মনে করে নজরুলই পৃথিবীর
একমাত্র ও শেষ কবি। আদের আর কোনো কবির দরকার নেই।

বাঙালি যখন সত্য কথা বলে
তখন বুঝতে হবে পেছনে কোনো অসৎ উদ্দেশ্য আছে।

আধুনিক প্রচার মাধ্যমগুলো
অসংখ্য শুয়োরবৎসকে মহামানবরূপে প্রতিষ্ঠিত করেছে।

অধিকাংশ রূপসীর হাসির শোভা মাংসপেশির কৃতিত্ব,
হৃদয়ের কৃতিত্ব নয়।


পাকিস্তানিদের আমি অবিশ্বাস করি, যখন তারা গোলাপ নিয়ে
আসে, তখনও।


পাকিস্তানিদের আমি অবিশ্বাস করি, যখন তারা গোলাপ নিয়ে
আসে, তখনও।

শৃঙ্খলপ্রিয় সিংহের থেকে স্বাধীন গাধা উত্তম।

বাঙলায় তরুণ বাবরালিরা খেলারাম, বুড়ো বাবরালিরাভণ্ডরাম।

প্রাক্তন বিদ্রোহীদের কবরে যখন স্মৃতিসৌধ মাথা তোলে, নতুন বিদ্রোহীরা তখন কারাগারে ঢোকে, ফাসিঁকাঠে ঝোলে।

একনায়কেরা এখন গণতন্ত্রের স্তব করে, পুজিঁপতিরা ব্যস্ত থাকে সমাজতন্ত্রের প্রশংসায়।

শয়তানের প্রার্থনায় বৃষ্টি নামে না, ঝড় আসে; তাতে অসংখ্য সৎ মানুষের মৃত্যু ঘটে।

শিক্ষকের জীবনের থেকে চোর, চোরাচালানি, দারোগার জীবন অনেক আকর্ষণীয়। এ সমাজ শিক্ষক চায় না, চোর- চোরাচালানি-দারোগা চায়।

বুদ্ধিজীবীরা এখন বিভক্ত তিন গোত্রে। ভণ্ড, ভণ্ডতর, ভণ্ডতম।

মানুষের ওপর বিশ্বাস হারানো পাপ, তবে বাঙালির ওপর বিশ্বাস রাখা বিপজ্জনক।

কবিরা বাঙলায় বস্তিতে থাকে, সিনেমার সুদর্শন গর্দভেরা থাকে শীতাতপনিয়ন্ত্রিত প্রাসাদে।

অভিনেত্রীরাই এখন প্রাতঃস্মরণীয় ও সর্বজনশ্রদ্ধেয়।

এক-বইয়ের-পাঠক সম্পর্কে সাবধান।

পুরস্কার অনেকটা প্রেমের মতো; দু-একবার পাওয়া খুবই দরকার, এর বেশি পাওয়া লাম্পট্য।

বেতন বাঙলাদেশে এক রাষ্ট্রীয় প্রতারণা। এক মাস খাটিয়ে এখানে পাঁচ দিনের পারিশ্রমিক দেয়া হয়।

Comments

গুরুপাপ

স্বার্থপরতা

মানুষ বড়ই আজিব প্রাণী। আসলে মানুষ যে কী জানে না, তাই জানে না। আবার কী জানে তাও জানে না। কিন্তু ভাবতে গেলে দেখা যাবে, সে অনেক কিছুই জানে। একই সাথে কোন কিছুই জানে না। যেমন এই কথাগুলো কেন লিখছি আমি নিজেও তা জানি না। আসলে আমার মনটা কিছুদিন যাবত্‍ খুব খারাপ যাচ্ছে। এই কয়েকদিন আমি আমার সম্পর্কে যা যা চিন্তা করেছি, তা যদি কোন ভাবে লিপিবদ্ধ করতে পারতাম, তাহলে হয়তো আমার স্বভাব বা প্রকৃতি সম্পর্কে একটা সঠিক ধারণা আমি নিজে পেতাম। আজকাল নিজেকেও বড় অচেনা লাগে। কিন্তু দুঃখের বিষয় আমি আমার চিন্তা ভাবনাগুলো লিপিবদ্ধ করতে পারি না। কারণ আমার মন যেভাবে চিন্তা করে, হাত সেভাবে চলে না। যদি মনের ছায়া হাতের মাধ্যমে ফেলা যেত, তাহলে মানুষ আজ এত দূরে এগিয়ে যেতে পারত, যা কেবল সায়েন্স ফিকসনেই সম্ভব। স্বার্থপরতা নিয়ে চিন্তা করছিলাম কিছুদিন যাবত্‍। এই বিষয় নিয়ে লেখতে শুরু করার কারণ হতে পারে, নিজেকে নিঃস্বার্থবান প্রমাণ করা। এবং এটাই সবচেয়ে বড় স্বার্থপরতা নয়? কিছু মনে করবেন না, আমি লেখার মাঝে আমার মনের ছায়া ফেলার চেষ্টা করছি। যদিও জানি বৃথা চেষ্টা। এটা কখনও পুরোপুরি সফল হবেনা। মানুষ কখনও স্বার্থপর হওয়া

একটি মেয়ের লেখা কিছু কবিতা।

১.পাখিরা আকাশে উড়ে নীচে পড়ে ছায়া প্রেম করে দূরে গেলে ভুলে যায় মায়া ২. ভাইয়া তুমি চাঁদের মত সূর্যের মত আলো কেমন করে লেখব চিঠি আমি যে খুব কালো ৩. চাঁদ সুন্দর ফুল সুন্দর আরও সুন্দর তুমি এই দুনিয়ায় দুটি প্রান তুমি আর আমি ৪.সামনে তোমার চাঁদের পাহাড় পিছনেতে আমি এবার বলো, কোনটা নিবে কোনটা বেশি দামী ৫. আম গাছে আম কদু গাছে কদু মেয়েদের বুকেই নাকী ছেলেদের মধু ৬. কোথায় রাখি এই উপহার সাত আকাশের তারা আর কিছু নেই আমার তো হৃদয়খানি ছাড়া ৭. কুটুম পাখি কুটুম পাখি তুমি কুটুম কার আমি বলি আমার কুটুম সে বলে তার আমার কাছে এলে তোমায় দেব খুশির চুম মজার মজার স্বপ্ন দেব দু চোখ ভরা ঘুম

হাজার বর্ষ আগে - জীবনানন্দ দাশ

সেই মেয়েটি এর থেকে নিকটতর হ’লো না : কেবল সে দূরের থেকে আমার দিকে একবার তাকালো আমি বুঝলাম চকিত হয়ে মাথা নোয়ালো সে কিন্তু তবুও তার তাকাবার প্রয়োজন – সপ্রতিভ হয়ে সাত-দিন আট-দিন ন-দিন দশ-দিন সপ্রতিভ হয়ে — সপ্রতিভ হয়ে সমস্ত চোখ দিয়ে আমাকে নির্দিষ্ট করে অপেক্ষা করে — অপেক্ষা ক’রে সেই মেয়েটি এর চেয়ে নিকটতর হ’লো না কারণ, আমাদের জীবন পাখিদের মতো নয় যদি হ’ত সেই মাঘের নীল আকাশে (আমি তাকে নিয়ে) একবার ধবলাটের সমুদ্রের দিকে চলতাম গাঙশালিখের মতো আমরা দু’টিতে আমি কোন এক পাখির জীবনের জন্য অপেক্ষা করছি তুমি কোন এক পাখির জীবনের জন্য অপেক্ষা করছো হয়তো হাজার হাজার বছর পরে মাঘের নীল আকাশে সমুদ্রের দিকে যখন উড়ে যাবো আমাদের মনে হবে হাজার হাজার বছর আগে আমরা এমন উড়ে যেতে চেয়েছিলাম।

ছেঁড়া নোঙ্গর -তুচ্ছ

একটা আঁধার চাই আঁধার নিকষ গাঢ় অন্ধকার থকথকে পিচ্ছিল আর নিঃস্বার্থবান আঁধার এই পটভূমিতে কালো অন্ধ পদরেখা মোর হেঁটে যাই গৃহ পথ পানে খুজে যাই সেই পুরোনো আঁধার আর না পাওয়া প্রিয়তমাকে দেয় সে জোর হাতছানি ডাকে মোরে তার কাছে ভেবে হই দিশেহারা মরীচিকা যদি হয় পাছে আবারও অতলে যাই তলায়ে যাই ভুলে তার পথ দেখেনু হৃদয় ভেঙ্গে মোর আজ হয়েছে তীক্ষ্ন ক্ষত ফিরিব আবার তাই বুঝি আমি ডুবেছি ভুলের সাগরে মন নৌকৌ আজি মেলিছে পাল ঘুণ ধরেছে ছেঁড়া নোঙ্গরে