Skip to main content

আমার ভুল ভাবনাগুলো

ঈশ্বরকে নিয়ে সেই ছোটবেলা থেকেই আমি প্রবল আগ্রহী ছিলাম। জানতে চেষ্টা করতাম তাকে নিয়ে, কিন্তু ছোট থাকার কারণে বুঝতামও কম, অবশ্য তখন জানার তেমন একটা সুযোগ ছিল না। আস্তে আস্তে যত দিন যেতে লাগল, আমার শিখার ক্ষেত্রেও বড় হতে শুরু করল। মোটামুটি ধরনের বই পড়ে অথবা সেই বইয়ের দ্বারা আমার যেসব নতুন চক্ষু গজিয়েছে তার মাধ্যমে অনেক কিছু উপলব্দি করতে শিখেছি।

প্রথমেই জানিয়ে রাখা ভাল আমি পৈতৃক সৃত্রে একজন মুসলমান। স্বভাবতই আমার অন্য ধর্মকে ঘৃণা করা উচিত্‍। কিন্তু বাধ সাধলো যখন বুঝতে পারলাম, যদি আমি স্বর্গে প্রবেশ করার অধিকার রাখি (ইসলাম ধর্ম মতে) তবে একজন বিধর্মীও সে অধিকার রাখে। কারণ, আমি মুসলমান হয়েছি আমার পিতা মুসলমান ছিলেন বিধায়। এ শর্তে যদি আমার পিতা হিন্দু ধর্মাবলম্বী হতেন তবে আমিও হিন্দুই হতাম। এখন আমি যেভাবে নামায পড়ছি রোজা রাখছি, তেমনিভাবে তখনও পূজা আর্চণায় ব্যস্ত থাকতাম। তবে আমার আর একজন হিন্দু ছেলের মধ্যে পার্থক্যটা কোথায় থাকলো? সে তো আর ইচ্ছা করে হিন্দু বাবার ঘরে জন্ম নেয় নি। এর বিপরীতে একটা প্রশ্ন জাগতে পারে, আল্লাহ তো তোমাকে বিবেক দিয়েছে। মানলাম আল্লাহ আমাকে বিবেক দিয়েছে এবং আমি সেই বিবেককে কাজে লাগিয়ে সবগুলো ধর্ম সম্পর্কে জানলাম এবং দেখতে পেলাম এই ধর্মটাই সত্য ধর্ম এবং আমি ঠিক মতই ধর্ম পালনে ব্রত হয়ে একসময় জান্নাতগামীও হলাম। এই যদি হয় তবে কোনো গোড়া মুসলমান জান্নাতে যাওয়ার অধিকার রাখে না। কারণ, সে যেমন অন্য ধর্ম সম্পর্কে উদাসীন তেমনি একজন গোড়া হিন্দুও ইসলাম ধর্ম সম্পর্কে উদাসীনই হবেন। এখন যদি ঐ গোড়া মুসলমান জান্নাতে যাওয়ার আধিকার রাখে তবে একজন হিন্দুও স্বর্গে যেতে অসুবিধা কোথায়। কিন্তু তখন ধর্মগ্রন্থ আমার বিপক্ষে চলে যাবে।

এবার আসা যাক সৃষ্টিকর্তাকে নিয়ে। আমি এ বিষয় নিয়ে আলোচনার সুবিধার্তে আমার ধর্মের সাথে হিন্দু ধর্মকে নিয়েছি।
পবিত্র কোরআনে পাকে আছে, ঐসকল মূর্তিদের তোমরা কেন উপাসনা করো, যারা খুব সহজেই ভঙ্গুর। মানলাম ঐসকল মূর্তি যেহেতু নিজেদেরই রক্ষা করতে পারে না তারা কিভাবে আমাদের রক্ষা করবে?
এবার যদি আমরা ঈশ্বরের দিকে তাকাই যিনি একাধারে ঈশ্বর এবং সর্বশক্তিমান, তাহলে একটা প্রশ্নের উত্তর কিন্তু তার সাথে মেলে না। যেমন কেউ একজন যদি জানতে চায় ঈশ্বর কি পারে না? আমাকে বাধ্য হয়েই বলতে হবে এমন কিছু নেই যা তিনি পারেন না। সবকিছুই তার নখদর্পনে। তখন যদি ঐ প্রশ্নকর্তা পুনরায় জানতে চায়, তাহলে বলুনতো ঈশ্বর নিজেকে ধ্বংশ করতে পারে কিনা? এই প্রশ্নটা নিয়ে আমি খুব ভাল ভাবে চিন্তা করেছি এবং এর বিভিন্ন ব্যাখা দাড় করাতে চেষ্টা করেছি। যতবার চিন্তা করে দেখলাম ততবারই এই প্রশ্নের উত্তরটাই আমার কাছে গ্রহণযোগ্য মনে হয়েছে। আসলে ঈশ্বর নিজেকে ধ্বংশ করতে পারেন না। কারণ তিনি যদি নিজেকে ধ্বংশই করে ফেলেন তবেতো তিনি আর ঈশ্বর থাকলেন না, নশ্বর হয়ে গেলেন। আবার তিনি যদি এটা করতে না পারেন তাইলে তিনি কিসের সর্বশক্তিমান হলেন যিনি অন্তত একটা কাজ পারেন না।
এবার তাহলে আমরা বলতে পারি হিন্দু ধর্ম এবং ইসলাম ধর্মের মধ্যে আসলে কোন পার্থক্য নেই। কেননা ঈশ্বর এবং কৃষ্ণ উভয়ই ধ্বংশশীল অথবা কিছু না কিছু পারেন না। এবার আসা যাক আমার ধর্মভাইরা আমার বিপক্ষে যেতে পারেন যে যুক্তিতে, আপনারা বলতে পারেন তাকে নিয়ে চিন্তা করতে কোরআনে নিষেধ আছে। তাহলে কিভাবে আপনারা অন্য ধর্ম বা তাদের প্রভুদের নিয়ে সমালোচনায় লিপ্ত থাকেন। এবার কি বলবেন শয়তানে যুক্তি বেশি? আরে ভাই আপনারাই তো যুক্তি দিয়ে ঐসব ধর্মগুলোকে মিথ্যা প্রমানিত করতে উঠে পরে লেগেছেন।
আমার যতটুকু জানা হিন্দু ধর্মেও নাকী এক ঈশ্বর বলে কিছু আছে, তারা যাকে কৃষ্ণ নামে ডাকে। তারপরও আপনার ঐ ধর্মকে মিথ্যা বলেন শুধুমাত্র এই যুক্তিতে ঐ সব ধর্মে নাকি অনেক প্রভুর বাস। আপনারা এত এত প্রভুকে বাদ দিয়ে একেশ্বরবাদী হয়ে স্বর্গে আর আমি মাত্র একটা ঈশ্বরকে বাদ দিয়ে
নরকের অনলে পুনঃ পুনঃ দগ্ধ হব। ঠিক আছে আপনারা যান স্বর্গের হুরদের উলঙ্গ নাচন দেখতে, আমি না হয় নরকের পেত্নি দেখেই মন ভরাবো।


বিঃ দ্রঃ বিভিন্ন আনুষাঙ্গিক অসুবিধার কারণে বিস্তারিত লিখতে পারি নি।তেমন গুছিয়েও লিখতে পারিনি। পরে এ বিষয় নিয়ে আমার মুক্ত চিন্তাগুলো ছড়িয়ে দেব।

Comments

গুরুপাপ

স্বার্থপরতা

মানুষ বড়ই আজিব প্রাণী। আসলে মানুষ যে কী জানে না, তাই জানে না। আবার কী জানে তাও জানে না। কিন্তু ভাবতে গেলে দেখা যাবে, সে অনেক কিছুই জানে। একই সাথে কোন কিছুই জানে না। যেমন এই কথাগুলো কেন লিখছি আমি নিজেও তা জানি না। আসলে আমার মনটা কিছুদিন যাবত্‍ খুব খারাপ যাচ্ছে। এই কয়েকদিন আমি আমার সম্পর্কে যা যা চিন্তা করেছি, তা যদি কোন ভাবে লিপিবদ্ধ করতে পারতাম, তাহলে হয়তো আমার স্বভাব বা প্রকৃতি সম্পর্কে একটা সঠিক ধারণা আমি নিজে পেতাম। আজকাল নিজেকেও বড় অচেনা লাগে। কিন্তু দুঃখের বিষয় আমি আমার চিন্তা ভাবনাগুলো লিপিবদ্ধ করতে পারি না। কারণ আমার মন যেভাবে চিন্তা করে, হাত সেভাবে চলে না। যদি মনের ছায়া হাতের মাধ্যমে ফেলা যেত, তাহলে মানুষ আজ এত দূরে এগিয়ে যেতে পারত, যা কেবল সায়েন্স ফিকসনেই সম্ভব। স্বার্থপরতা নিয়ে চিন্তা করছিলাম কিছুদিন যাবত্‍। এই বিষয় নিয়ে লেখতে শুরু করার কারণ হতে পারে, নিজেকে নিঃস্বার্থবান প্রমাণ করা। এবং এটাই সবচেয়ে বড় স্বার্থপরতা নয়? কিছু মনে করবেন না, আমি লেখার মাঝে আমার মনের ছায়া ফেলার চেষ্টা করছি। যদিও জানি বৃথা চেষ্টা। এটা কখনও পুরোপুরি সফল হবেনা। মানুষ কখনও স্বার্থপর হওয়া

একটি মেয়ের লেখা কিছু কবিতা।

১.পাখিরা আকাশে উড়ে নীচে পড়ে ছায়া প্রেম করে দূরে গেলে ভুলে যায় মায়া ২. ভাইয়া তুমি চাঁদের মত সূর্যের মত আলো কেমন করে লেখব চিঠি আমি যে খুব কালো ৩. চাঁদ সুন্দর ফুল সুন্দর আরও সুন্দর তুমি এই দুনিয়ায় দুটি প্রান তুমি আর আমি ৪.সামনে তোমার চাঁদের পাহাড় পিছনেতে আমি এবার বলো, কোনটা নিবে কোনটা বেশি দামী ৫. আম গাছে আম কদু গাছে কদু মেয়েদের বুকেই নাকী ছেলেদের মধু ৬. কোথায় রাখি এই উপহার সাত আকাশের তারা আর কিছু নেই আমার তো হৃদয়খানি ছাড়া ৭. কুটুম পাখি কুটুম পাখি তুমি কুটুম কার আমি বলি আমার কুটুম সে বলে তার আমার কাছে এলে তোমায় দেব খুশির চুম মজার মজার স্বপ্ন দেব দু চোখ ভরা ঘুম

হাজার বর্ষ আগে - জীবনানন্দ দাশ

সেই মেয়েটি এর থেকে নিকটতর হ’লো না : কেবল সে দূরের থেকে আমার দিকে একবার তাকালো আমি বুঝলাম চকিত হয়ে মাথা নোয়ালো সে কিন্তু তবুও তার তাকাবার প্রয়োজন – সপ্রতিভ হয়ে সাত-দিন আট-দিন ন-দিন দশ-দিন সপ্রতিভ হয়ে — সপ্রতিভ হয়ে সমস্ত চোখ দিয়ে আমাকে নির্দিষ্ট করে অপেক্ষা করে — অপেক্ষা ক’রে সেই মেয়েটি এর চেয়ে নিকটতর হ’লো না কারণ, আমাদের জীবন পাখিদের মতো নয় যদি হ’ত সেই মাঘের নীল আকাশে (আমি তাকে নিয়ে) একবার ধবলাটের সমুদ্রের দিকে চলতাম গাঙশালিখের মতো আমরা দু’টিতে আমি কোন এক পাখির জীবনের জন্য অপেক্ষা করছি তুমি কোন এক পাখির জীবনের জন্য অপেক্ষা করছো হয়তো হাজার হাজার বছর পরে মাঘের নীল আকাশে সমুদ্রের দিকে যখন উড়ে যাবো আমাদের মনে হবে হাজার হাজার বছর আগে আমরা এমন উড়ে যেতে চেয়েছিলাম।

হুমায়ুন আজাদের প্রবচন গুচ্ছ

মহামতি সলোমনের নাকি তিন শো পত্নী, আর সাত হাজার উপপত্নী ছিলো। আমার মাত্র একটি পত্নী। তবু সলোমনের চরিত্র সম্পর্কে কারো কোনো আপত্তি নেই, কিন্তু আমার চরিত্র নিয়ে সবাই উদ্বিগ্ন। বাঙলার প্রধান ও গৌণ লেখকদের মধ্যে পার্থক্য হচ্ছে প্রধানেরা পশ্চিম থেকে প্রচুর ঋণ করেন, আর গৌণরা আবর্তিত হন নিজেদের মৌলিক মূর্খতার মধ্যে। বাঙালি মুসলমানের এক গোত্র মনে করে নজরুলই পৃথিবীর একমাত্র ও শেষ কবি। আদের আর কোনো কবির দরকার নেই। বাঙালি যখন সত্য কথা বলে তখন বুঝতে হবে পেছনে কোনো অসৎ উদ্দেশ্য আছে। আধুনিক প্রচার মাধ্যমগুলো অসংখ্য শুয়োরবৎসকে মহামানবরূপে প্রতিষ্ঠিত করেছে। অধিকাংশ রূপসীর হাসির শোভা মাংসপেশির কৃতিত্ব, হৃদয়ের কৃতিত্ব নয়। পাকিস্তানিদের আমি অবিশ্বাস করি, যখন তারা গোলাপ নিয়ে আসে, তখনও। পাকিস্তানিদের আমি অবিশ্বাস করি, যখন তারা গোলাপ নিয়ে আসে, তখনও। শৃঙ্খলপ্রিয় সিংহের থেকে স্বাধীন গাধা উত্তম। বাঙলায় তরুণ বাবরালিরা খেলারাম, বুড়ো বাবরালিরাভণ্ডরাম। প্রাক্তন বিদ্রোহীদের কবরে যখন স্মৃতিসৌধ মাথা তোলে, নতুন বিদ্রোহীরা তখন কারাগারে ঢোকে, ফাসিঁকাঠে ঝোলে। একনায়কেরা এখন গণতন্ত্রের স্তব করে, পুজিঁপতিরা ব্যস্ত থাকে সমাজ

ছেঁড়া নোঙ্গর -তুচ্ছ

একটা আঁধার চাই আঁধার নিকষ গাঢ় অন্ধকার থকথকে পিচ্ছিল আর নিঃস্বার্থবান আঁধার এই পটভূমিতে কালো অন্ধ পদরেখা মোর হেঁটে যাই গৃহ পথ পানে খুজে যাই সেই পুরোনো আঁধার আর না পাওয়া প্রিয়তমাকে দেয় সে জোর হাতছানি ডাকে মোরে তার কাছে ভেবে হই দিশেহারা মরীচিকা যদি হয় পাছে আবারও অতলে যাই তলায়ে যাই ভুলে তার পথ দেখেনু হৃদয় ভেঙ্গে মোর আজ হয়েছে তীক্ষ্ন ক্ষত ফিরিব আবার তাই বুঝি আমি ডুবেছি ভুলের সাগরে মন নৌকৌ আজি মেলিছে পাল ঘুণ ধরেছে ছেঁড়া নোঙ্গরে